শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকা উপায়
আপনি যদি আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চান এবং শারীরিকভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকতে চান তাহলে সঠিক নিয়মে এবং ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবারগুলো খেতে হবে। চলুন জেনে নেই কিভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকা যায়।
সূচিপত্র: শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং ফিরে থাকার উপায় গুলো জেনে নিন
- ছেলেদের শরীর ফিট রাখার উপায়
- কি খেলে শরীর ফিট রাখা যায়
- ঘরে বসে মেয়েদের সুস্থ থাকার উপায়
- শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পবিত্রতার ভূমিকা
- মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার কি কি
- শারীরিক সুস্থতায় ব্যায়াম করার সঠিক সময় কোনটি
- শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ঘুমের উপকারিতা
- মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
- শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত পানির উপকারিতা
- লেখকের শেষ মন্তব্য
ছেলেদের শরীর ফিট রাখার উপায়
ছেলেদের শরীর ফিট রাখার উপায় অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা উচিত। ছেলেদের শরীর ফিট রাখার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখা। কোথাও বাইরে যাওয়ার সময় অথবা ঘুরতে যাওয়ার সময় কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, ওয়ালনাট, খেজুর, তিশির বীজ এবং মিনারেল পানি নিতে হবে।
আরো পড়ুন: নিম পাতার ঔষধি গুনাগুন ও নিমপাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা
এর সঙ্গে কিছু শারীরিক ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তোলা। তাছাড়া নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একটানা না পারলে ২০ মিনিট করে সকালবেলা এবং ২০ মিনিট করে বিকেলবেলা হাঁটার অভ্যাস করে তুলতে হবে। হাঁটার গতি এমন হবে যে শরীর যেন ঘেমে যায়। ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে সাইকেল চালানো, জগিং, সাঁতার কাটা, হাটা ইত্যাদি।
তাছাড়া ছেলেদের শরীর ফিট রাখার জন্য পবিত্রতার ভূমিকা অন্যরকম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার মাধ্যমে ছেলেদের শরীর সুস্থ এবং ফিট থাকে। একজন মানুষের যতোটুকু হাঁটাহাঁটি করা বা ব্যায়াম করা উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার মাধ্যমে তা পূরণ হয়ে যায়।
কি খেলে শরীর ফিট রাখা যায়
কি খেলে শরীর ফিট রাখা যায় এই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত জেনে নিন। শরীরকে ফিট
রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। আপনাকে
সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এক গ্লাস মিনারেল পানি পান করতে হবে।
আপনি সকালবেলা কাজ শুরু করা থেকে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অবশ্যই
পানির বোতল সাথে রাখতে হবে।
তাছাড়া খাবারের কথা বলতে গেলে আপনি কখনোই বাইরের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে যাবেন
না। আমরা অনেকেই বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। এই থেকে
নিজেকে দূরে রাখতে হবে। আপনি যখনই বাহিরে যাবেন সঙ্গে নিতে পারেন কিছু বাদাম,
কলা, খেজুর, এবং মিনারের পানির বোতল। আপনি বাহিরের চিপস চকলেট খেতে যাবেন না।
ঘরে বসে মেয়েদের সুস্থ থাকার উপায়
ঘরে বসে মেয়েদের সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলে শরীর এবং মন দুটি ভালো থাকে। মেয়েদের সুস্থ থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে যার যার ধর্ম অনুসারে সেটি পালন করা। মেয়েদের সুস্থ থাকতে হলে ঘরের মধ্যেই ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটির অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
আরো পড়ুন: কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
তাছাড়া খাদ্য তালিকায় সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। খাদ্য তালিকায়
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ছোট মাছ, দুধ, ডিম বাদাম লাল চাল এবং লাল রুটি খেতে হবে।
যেহেতু মেয়েদের ঘর থেকে বাহিরে বের হওয়া উচিত না তাই মিষ্টি জাতীয় কোন
খাবার খাওয়া উচিত না। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পবিত্রতার ভূমিকা
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পবিত্রতার ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখা উচিত। আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার এবাদত করার জন্য। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একজন মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের মাধ্যমে তার শরীরের যে ব্যায়ামের চাহিদা সেটি পূরণ হয়ে যায়।
তাছাড়া এবাদত করার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকে। মন সবসময় পবিত্র থাকে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের মানুষের উচিত তার নিজ নিজ ধর্মকে পালন করা। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজের যত্ন ও পরিচর্যা, এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার অভ্যাস গড়ে তোলা। ইসলামের দৃষ্টিতে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করার চেয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্যবিধে মেনে চলা।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার কি কি
আরো পড়ুন: রোগ নিরাময়ে কালোজিরার ১৫ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
টিপ্টোফ্যান পাওয়া যায় টার্কি, কলা,দুধ, পনির, চিনা বাদাম মাখন, তিলের বীজ, মুরগির মাংস ইত্যাদিতে। তাছাড়া ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত ভিটামিন বি খাবারের মধ্যে রয়েছে গরুর মাংস, মুরগির মাংস, কমলা, শাক, সাইট্রাস ফল, বাদাম, ডিম, ইত্যাদি এগুলো মানুষের বিষণ্ণতা দূর করতে সক্ষম।
শারীরিক সুস্থতা ব্যায়াম করার সঠিক সময় কোনটি
শারীরিক সুস্থতায় ব্যায়াম করার সঠিক সময় কোনটি এই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত জেনে
নিন। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। শারীরিক সুস্থতার জন্য একজন মানুষের ব্যায়াম করা
জরুরী। ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। আর ব্যায়াম করার
উপযুক্ত সময় হচ্ছে বিকেল বেলা। অর্থাৎ ঘুম থেকে ওঠার ৬ ঘন্টা পরে এবং ১২ ঘণ্টার
মধ্যে।
দুপুরে খাবার পর কখনোই বসে পড়বেন না বা শুয়ে পড়বেন না। খাবার খাওয়ার পর অবশ্যই হাঁটাহাঁটি করতে হবে। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর দুই তিন ঘণ্টা পরে ব্যায়াম করা উচিত। সন্ধ্যাবেলা অবশ্যই হাঁটাহাঁটি করতে হবে। এমন ভাবে হাঁটাহাঁটি করতে হবে যেন শরীর পুরোটা ঘেমে যায়। ব্যায়াম করার মাধ্যমে ঘুম ভালো হয়।
বিকেল বেলা মনোরম পরিবেশে ১৫ মিনিট মেডিটেশন করতে হবে এতে মন ভালো
থাকে। ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের রক্ত চলাচল এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে
যায়।
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ঘুমের উপকারিতা
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ঘুমের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই জেনে
রাখা উচিত। ঘুম আমাদের জন্য অতি অপরিহার্য। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ৭
থেকে ৯ ঘন্টা ঘুম পারা উচিত। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের ফলে মেজাজ ঠান্ডা থাকে এবং
স্মৃতি শক্তি বজায় রাখে। আমরা প্রত্যেকেই জানি আগেভাগে ঘুমোতে যাওয়া উচিত এবং
খুব ঘুরে ঘুম থেকে ওঠা উচিত।
আরো পড়ুন: নিয়মিত কলা খাওয়ার ১০ টি কার্যকরী উপকারিতা
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের ফলে আপনার কাজের গতি অনেক বেড়ে যাবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে
ঘুমের ফলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকবে। ঘুম কম হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুম কম
হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় ধৈর্যও কমতে থাকে। দিনের বেলা যাদের ঘুমের অভ্যাস
রয়েছে। তাদের উচিত ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টার বেশি ঘুম না পারা।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। মানসিক
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনেকগুলো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যেমন পর্যাপ্ত
পরিমাণে ঘুম পাড়া, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে পানি পান করা, তারপর দাঁত ব্রাশ করা,
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি। শরীরে কোন অসুখ দেখা
দিলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
আপনারা যারা শরীরচর্চা কে বিশেষ গুরুত্ব দেন ঠিক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো
রাখার জন্য কিছু ব্যায়ামের মত অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত ১০ থেকে ১৫ মিনিট
মেডিটেশন করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কাজ এবং বিশ্রামের জন্য একটি রুটিন গড়ে
তুলুন। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত
আদায় করতে হবে। এছাড়া ছবি আঁকা গান শোনা এগুলো আপনার থেরাপির মত কাজ করবে।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত পানির উপকারিতা
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হতাশাগ্রস্ত, এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আপনি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করুন। কাজ শুরু করার সময় আপনার টেবিলের উপর পানির বোতল রাখবেন এবং ঘুমানোর সময় বিছানার পাশে পানির বোতল রাখা উচিত।
খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর পানি পান করা উচিত। ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই পানির বোতল সঙ্গে রাখতে হবে। আপনি চাইলে পানিতে লেবুর রস, গ্লুকোজ, শসা ইত্যাদি মিশাতে পারেন। এতে পানি স্বাদ বাড়বে। এতে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকতে পারবেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ এবং ফিট থাকার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে। আপনি যদি একজন সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন এবং শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ
এবং ঠিক থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার আমাদের এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়া
উচিত।
আশা করছি আপনি আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে বিস্তারিতভাবে বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ
এবং তথ্যমূলক বিষয় জানতে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url