কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
কাঁচা আমলকির রয়েছে হাজারো রকমের গুন। আমলকি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমলকিতে ভিটামিন সি থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা।
চুল পড়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শরীরকে চাঙ্গা করতে আমলকি ব্যবহার হয় থাকে। এখন আমাদের জানতে হবে আমলকি কখন এবং কিভাবে খাওয়া উচিত। এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে।
সূচিপত্র: কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা বিস্তারিত নিন
- খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম
- প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত
- কাঁচা আমলকির রস চুলে দেওয়ার নিয়ম
- রাতে আমলকি খেলে কি হয়
- শুকনো আমলকি খেলে কি হয়
- আমলকির ক্ষতিকর দিক কি কি
- আমলকির জুস কখন খাওয়া উচিত
- লেখকের শেষ মন্তব্য
খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম
খালি পেটে আমলকি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। আমলকি খাওয়ার অনেক
উপকারিতা রয়েছে। সকালে খালি পেটে আমলকি খেতে পারেন। আমলকি প্রথমে ভালো করে
ধুয়ে হালকা কুসুম গরম পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এই পানি আপনি পান করতে পারেন।
তাছাড়া আমলকি টুকরোগুলো খেতে পারেন। আমলকি আমাদের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য
করে। তাছাড়া এর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে।
আরো পড়ুন:স্টুডেন্ট অবস্থায় মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
জ্বর কমানোর জন্য আমলকি রস পান করা যেতে পারে। যাদের দাঁত ব্যথা করে তারা আমলকির
রসের সামান্য কর্পূর মিশিয়ে মারিতে লাগিয়ে দিলে দাঁত ব্যাথা ভালো হয়ে যায় এবং
ক্যাভিটি দূর হয়ে যায়। বমি বমি ভাব হলে আমলকির রস খেতে পারেন। মুখে সৌন্দর্য
বৃদ্ধি করতে আমলকির পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগাতে হবে। আমলকির রস পানের ফলে
কোলেস্টেরলের স্তর ও কমানো সম্ভব। লিভারকে সুস্থ রাখতে আমলকি খাওয়া যেতে পারে।
চুলের প্রধান ঔষধ হিসেবে আমলকি ব্যবহার করা উচিত।
প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে জেনে নিন। আমলকি খুবই পুষ্টিগুণ
সম্পন্ন একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই একজন প্রাপ্তবয়স্ক
মানুষের প্রতিদিন একটি থেকে দুইটি আমলকি খাওয়া যেতে পারে। এর বেশি খেলে
কোষ্ঠকাঠিন্য জেরে যেতে পারে।
কাঁচা আমলকির রস চুলে দেওয়ার নিয়ম
কাঁচা আমলকি চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। যাদের চুল ঝরে
পড়ে, রুক্ষ শুষ্ক চুল তাদের জন্য কাঁচা আমলকির রস চুলে দিতে হবে। কাঁচা আমলকি
থেকে রস বের করে নিতে হবে। এরপর মাথায় আমলকির রস দিতে হবে। ১০ থেকে ১৫
মিনিট হাতের আঙ্গুল দিয়ে মাথা ভালো ভাবে ম্যাসাস করতে হবে। এরপর ২০ থেকে ৩০
মিনিট রাখতে হবে। তারপর গোসল করার সময় শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
নারিকেল তেল এবং আমলকির রস ও ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া লেবুর রসের সঙ্গে আমলকির রস মিশিয়েও চুল পড়া বন্ধ এবং রুক্ষ শুষ্ক চুল সুন্দর করতে পারেন। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এছাড়া আমলকি তেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। চুলের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এর জন্য দরকার লেবুর রস এক চামচ এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ আমলকির রস ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এভাবে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর গোসলের সময় ধুয়ে ফেলুন।
রাতে আমলকি খেলে কি হয়
রাতে আমলকি খেলে কি হয় এই সম্পর্কে জেনে নিন। আমলকি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল।
আমলকি ত্বক এবং চুল সুন্দর করতে পারে। যাদের ত্বক রুক্ষ শুষ্ক তাদের উচিত
ঘুমানোর পূর্বে একটি করে আমলকি খাওয়া। প্রতিদিন দুপুরে এবং রাতে আমলকি খেলে
বদহজমের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
শুকনো আমলকি খেলে কি হয়
শুকনো আমলকি খেলে কি হয় এই সম্পর্কে জেনে নিন। আমলকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়াতে সাহায্য করে। শুকনো আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যাদের
বদহজমের সমস্যা রয়েছে। তাদের উচিত ঘুমানোর পূর্বে একটি করে শুকনো আমলকি খাওয়া।
এতে বদহজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া তাদের দৃষ্টি শক্তি দুর্বল।
চোখে ঠিকমতো দেখতে পারেন না। চোখ ব্যথা করে তাদের জন্য একটি থেকে দুইটি আমলকি
খাওয়া উচিত। তাহলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া যাদের নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পর নিঃশেষের সঙ্গে দুর্গন্ধ বের হয়। তাদের
শুকনো আমলকি খাওয়া উচিত।
আমলকির ক্ষতিকর দিক কি কি
আমলকির ক্ষতিকর দিক কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। অন্যান্য সব ফলের মতই
আমলকির উপকারের পাশাপাশি কিছু অপকারও রয়েছে। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি
থাকায়। অতিরিক্ত খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য সেসব ব্যক্তিদের
আমলকি থেকে দূরে থাকা উচিত। আমলকি ঠান্ডা জাতীয় ফল হওয়ায় সর্দি কাশির
সমস্যা হতে পারে। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা
বেড়ে যেতে পারে।
যাদের অস্ত্রপচার করা হয় তাদের উচিত কিছু মাস পর্যন্ত ফল মুখে না দেওয়া। এ
ছাড়া এটি ব্লাড প্রেশার কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। যাদের ব্লাড প্রেসার লো তাদের
এই ফলটি না ছোঁয়াই ভালো।
আমলকির জুস কখন খাওয়া উচিত
আমলকির জুস কখন খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। আমলকি একটি টক
জাতীয় ফল। এটি সারা বছর পাওয়া যায়। তবে শীতকালে এটি বাজারে প্রচুর পরিমাণে
পাওয়া যায়। আমলকি টক জাতীয় ফল হওয়ায় সবাই এটি পছন্দ করে না। আমলকি অনেক
পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। আমলকি খাওয়ার পাশাপাশি আমলকির জুসও খাওয়া যেতে
পারে। পেপটিক আলসার প্রতিরোধে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমলকির জুস খেতে
পারেন।
তাছাড়া আমলকির জুস খাওয়ার ফলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া ওজন কমাতেও সাহায্য করে। নিয়মিত আমলকির জুস খেলে রক্তে কোলেস্টেরলে মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমতে পারে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে আমলকির জুস খেতে পারেন। সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে। আপনি যদি আমলকি পছন্দ করেন এবং নিয়মিত খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিয়ম
মেনে আপনাকে খেতে হবে। সেই সঙ্গে এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনেও খাওয়া উচিত।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি এই ধরনের আরও
আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url